ঢাকা , শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ , ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালী পৌরসভার অধিকাংশ পুকুরপাড়ে অনিরাপদ যাতায়াত ও বসতি


আপডেট সময় : ২০২৫-০৫-২৩ ২৩:৪৩:৫৮
পটুয়াখালী পৌরসভার অধিকাংশ পুকুরপাড়ে অনিরাপদ যাতায়াত ও বসতি পটুয়াখালী পৌরসভার অধিকাংশ পুকুরপাড়ে অনিরাপদ যাতায়াত ও বসতি
 

মনজুর মোর্শেদ তুহিন (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বর্তমানে ১ম শ্রেণীর নান্দনিক পটুয়াখালী পৌরসভায় ২৬ বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১লক্ষ ২০ হাজার মানুষের বসবাস। ৯টি ওয়ার্ডে তালিকাভুক্ত সরকারি ও মালিকানাধীন মোট পুকুরের সংখ্যা ৪৩ টি। পৌরসভার অসংখ্য সড়ক কিংবা লেন পুকুরের পাড় ঘেঁষেই চলে গিয়েছে।


অধিকাংশ পুকুরপাড়ে রয়েছে অসংখ্য মানুষের বসতি ও ঘরবাড়ি, তবে প্রতিটি পুকুর পাড় কোন না কোনভাবেই অনিরাপদ। অধিকাংশ পুকুরপাড়ের রাস্তায় যান চলাচল কিংবা বসতি রয়েছে ব্যাপক ঝুকির মধ্যে। দৃশ্যমান নান্দনিক পটুয়াখালী পৌরসভার আড়ালে রয়েছে নগরবাসীর অনিরাপদ জীবন যাপন। 

 
পৌরসভার তথ্য মতে, পটুয়াখালী পৌরসভায় তালিকাভুক্ত পুকুর রয়েছে ৪৩ টি। এর মধ্যে ১ নং ওয়ার্ডে ১২টি, ২ নং ওয়ার্ডে ৩টি, ৩ নং ওয়ার্ডের ১টি, ৪ নং ওয়ার্ডের ৮টি, ৫ নং ওয়ার্ডের ৬টি, ৬নং ওয়ার্ডের ২টি, ৭ নং ওয়ার্ডের ৭টি, ৮ নং ওয়ার্ডের ২টি, ৯ নং ওয়ার্ডের ৩টি।


এছাড়াও তালিকা বিহীন রয়েছে বেশ কয়েকটি ডোবা-নালা। কিছু পুকুর রয়েছে বিবাদপূর্ণ, আদালতের নির্দেশে কেহ মালিকানা দাবি করতে পারছে না। তবে পৌরসভার অভ্যন্তরে প্রতিটি জলাশয়, পুকুর এবং লেক সহ সবকিছু থাকবে পৌর কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণে।


এর মধ্যে রয়েছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, নিরাপদ বেষ্টনী তৈরি করা, পুকুরের পারগুলোয় চলাচলের পথ নিরাপদ রাখা ইত্যাদি। জলাশয় কে ঘিরে যেন মশার উপদ্রব, পানিবাহিত রোগ কিংবা কোন ধরনের বিপত্তি তৈরি না হয় এসবের দায়িত্ব পটুয়াখালী পৌরসভার।  

 
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রের বেশ কয়েকটি পুকুরে পাড়ের রাস্তা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যানবাহন চলাচল করছে। কয়েকটি পুকুর পাড়ের সরু রাস্তা দিয়ে নিয়মিত রিক্সা-অটো চলাচল করে সাথে  স্কুল-কলেজ সহ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরাও পায়ে হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে পুকুরের পাড় দিয়ে চলাচল করে। যা দেখতে অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপদ মজবুত বেষ্টনী না থাকায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।


এছাড়াও পরিছন্নতার অভাবে বেশ কয়েকটি পুকুর তৈরি হয়েছে, ময়লার ভাগাড়। কিছু পুকুর পাড়ে গড়ে ওঠা বসত ঘরগুলো রয়েছে ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে। দুর্গন্ধ, পোকামাকড়, মশার মধ্যে তাদের জীবন যাপন। চোখে পড়ার মত অনিরাপদ পুকুরের মধ্যে রয়েছে মদিনা মসজিদ সংলগ্ন পুকুর, টিভি ক্লিনিক সংলগ্ন পুকুর, বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পুকুর সহ অন্তত ১০ টি পুকুর। ২০টির মত  পুকুরের পানি ব্যবহারের সম্পুর্ন অনুপযোগী এবং নগরবাসীর বিরম্বনা। বিশেষ করে জন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার পুকুরপার গুলোতে মজবুত বেষ্টনী না দিলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। 

 
 বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক বশির উদ্দিন বলেন, বাসা থেকে স্কুল কাছাকাছি হওয়ায় প্রতিদিন বাচ্চাকে নিয়ে পায়ে হেঁটে  আসা-যাওয়া করি। পুকুর পাড়গুলো দিয়ে যেতে খুবই ভয় লাগে কারণ যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া বর্ষার মৌসুমগুলোতে পুকুর পাড় গুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়। পার গুলোর চারপাশে পাকা বেড়া দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই। 

 
মদিনা মসজিদ সংলগ্ন বিসমিল্লাহ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক বলেন, সারাক্ষণ দোকানে থাকি কিন্তু মনে হয় একটা ডাস্টবিনের পাশে বসে আছি। পুরা পুকুরটা জুরে একটা ডেঙ্গু মশার কারখানা। বছরে একবার দুইবার পরিষ্কার করতে দেখি। পুকুরপাড়ে মাদ্রাসার বাচ্চারা খেলাধুলা করে, যে কোন সময় পুকুরে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

 
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, পুকুরের পারগুলো বাধাই করে টেকসই করার চেষ্টা করি তবে কলের পুকুর পাড়ের কিছু নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো ময়লা ফেলে পানি নষ্ট করছে। নির্বাচিত সরকার থাকাকালীন শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের সঙ্গে পুকুর পাড়ের রাস্তাগুলো রেলিং করার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সেরকম নেই।


জানামতে কলের পুকুরের পানি অপরিকল্পিত ব্যবহারের কারণে নষ্ট করছে। মানুষের অসচেতনতার কারণে ময়লা ফেলে আমাদের পৌরসভার পুকুর গুলো নষ্ট করছে। কিছু লোক রাতের আঁধারেও পুকুরে ময়লা ফেলে। এত বড় পৌরসভায় আয়তনের তুলনায় আমাদের পরিচ্ছন্ন কর্মী কম। পৌরসভার মাধ্যমে এর মধ্যে দুটো পুকুর খনন করা হয়েছে।পৌরসভার মধ্যে অন্য যেসব প্রতিষ্ঠানের পুকুর আছে তাদের উচিত নিজেদের পুকুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। 






 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ